সকালে ঘুম থেকে উঠে টয়লেটে গিয়ে দীর্ঘ সময় বসে থাকা। পায়খানা করতে কষ্ট হয়। বেরিয়ে আসার পরও স্বস্তি নেই। এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের লক্ষণ।
এ রোগ নিয়ে বেশিরভাগ মানুষেই লজ্জা পায়। যা মোটেও ঠিক নয়। এরকম অবস্থা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ:
নানা কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতেই পারে। অনেকের এমনিতে কোনো রোগ ছাড়াই কোষ্ঠকাঠিন্য হয় আবার বেশকিছু রোগের লক্ষণ হিসেবেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
১. পেট পরিষ্কার করার জন্য খাবারে আঁশ থাকা গুরুত্বপূর্ণ। খাবারে আঁশ যুক্ত খাবার না থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
সমাধান: যেসব খাবারে ফাইবার বা আঁশ বেশি সেগুলো খেতে হবে। যেসব খাবারে আঁশ বেশি সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাল, ছোলা, গাজর, শসা, টমেটো, আপেল, কলাসহ প্রায় সব শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য গোটা শস্য দানা ইত্যাদি।
এছাড়াও-
১. রুটি বা ভাতের সঙ্গে ডাল খাওয়া।
২. প্রতি বেলায় সবজি খাওয়া।
৩. শসা-গাজর-টমেটোর সালাদ খাওয়া।
৪.নাস্তার সঙ্গে যেকোনও একটা ফল যেমন: কলা, আপেল, নাশপাতি বা বাদাম খাওয়া।
৫. যেসব ফল ও শাক-সবজি খোসা-সহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা-সহই খেতে হবে। তবে তার আগে অবশ্যই সেগুলো ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।
৬. যতটা সম্ভব ফল বা সবজি আস্ত রেখে খাওয়া। ব্লেন্ড বা জুস কিংবা ভর্তা বানালে আঁশ কমে যায়।
২. মল নরম হতে হলে শরীরে পানির প্রয়োজন হয়। যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান না করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
সমাধান: দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করা।
৩. হাঁটা-চলা কমিয়ে দিলে, শারীরিক পরিশ্রম কম হলে এবং অনেকক্ষণ সময় ধরে শুয়ে-বসে থাকলে এবং ব্যায়াম না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। শারীরিক পরিশ্রম ও শরীর চর্চা বৃহদন্ত্র সচল হয় এবং স্বাভাবিক মল ত্যাগে সাহায্য করে।
সমাধান: ঘরে বেশি সময় ধরে শুয়ে-বসে না থাকা। শারীরিক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করা।
৪. পায়খানা না করে আটকে রাখলে দিন দিন শরীর সেটা থেকে পানি শুষে নেয়। ফলে মল খুবই শুকে যায় এবং তা বের হওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।
সমাধান: পায়খানার চাপ আসলে বেশি দেরি না করা। যত দ্রুত সম্ভব তা সেরে ফেলা।
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ আছে তাদের জন্য সবচেয়ে ভাল হয়ে উঁচু কমোড ব্যবহার না করে। বরং নিচু প্যান ব্যবহার করা ভাল।
৫. অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বিগ্নতা ও বিষণ্ণতার কারণে মানসিক চাপ দেখা দিতে পারে।
সমাধান: মানসিক প্রশান্তি আনে কিছু কাজ করার চেষ্টা করুন। সেটা হতে পারে আপনজনের সঙ্গে সময় কাটানো।
৬. বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, সিরাপ এবং মলদ্বারের ভিতরে দেওয়ার ওষুধ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করে থাকেন, যা মোটেও উচিত নয়। নিয়মিত এসব ওষুধ ব্যবহার করলে সেটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে যায়। এর ফলে মলদ্বারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা আর থাকে না।
সমাধান: ওষুধ খাওয়া শুরু করার পর যদি মনে হয় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যাচ্ছে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন।