রাত ৮:১৮ শুক্রবার ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ৩রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম লাইফস্টাইল ডেঙ্গু থেকে সাবধান!

ডেঙ্গু থেকে সাবধান!

লিখেছেন Fahmid Souror
Spread the love

ফাহমিদ সৌরভ

এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা! এক করোনা ভাইরাসই সাধারণ মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে রেখেছে এর ওপর নতুন বিপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। রাজধানীসহ দেশের অনেক জায়গায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অনেকেই। এখনই সাবধান না হলে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যে আরো বাড়বে সেটা হয়তো না বললেও চলে।

ডেঙ্গু একটি ভাইরাস জ্বর। এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে মানুষের শরীরে এই ভাইরাস বাসা বাঁধে। ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোন ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন।

আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস প্রবেশ করেন। এভাবেই চলতে থাকে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন।

ডেঙ্গু অনেক সময় প্রাণঘাতী হতে পারে। দুই ধরণের ডেঙ্গু জ্বরের মধ্যে ক্লিনিক্যাল ডেঙ্গু মোটামুটি সহনশীল। সঠিক চিকিৎসায় কয়েক দিনের মধ্যেই সেটা সেরে যায়। তবে হেমোরেজিক ডেঙ্গু খুবই ভয়ঙ্কর। বেশিরভাগ সময়ই এর কোনো প্রতিষেধক পাওয়া যায় না। লক্ষণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়।

আরো পড়ুন:

গণপরিবহন ব্যবহারে আরো সতর্ক হোন

ডেঙ্গুতে সাধারণত মাঝারি থেকে তীব্র জ্বর হতে পারে। এই সময় শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি থাকতে পারে। অনেক সময় একটানা কয়েক দিন পর্যন্ত জ্বর থাকে।

সেই সাথে সারা শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ দেখা যেতে পারে। বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হতে পারে।

বাংলাদেশে সাধারণত মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটে থাকে। তবে শীতের সময় ছাড়া আর যে কোনো ঋতুতেই ডেঙ্গু রোগ হতে পারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। ‘জ্বর হলে কমপক্ষে এক সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রামে বিশ্রামে থাকতে হবে। জ্বর হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ সেবন করা যেতে পারে তবে কোনোভাবেই অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করা যাবে না। এতে হিতে বিপরীতি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বর হলে শরীরের পানির অভাব দেখা দিতে পারে তাই রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার দিতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য দিনে কয়েকবার ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিতে হবে।

তবে শরীরের যেকোনো অংশে রক্তপাত, প্লাটিলেট কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, প্রসাব আকস্মিকভাবে কমে যাওয়া, জণ্ডিস, অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ, পেট ব্যথা, বমি হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বর প্রতিরোধের একমাত্র উপায় এডিস মশার বিস্তার রোধ করা। কোনোভাবেই যাতে মশা কামড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা। বাড়ির আশপাশের পরিবেশ যেমন আগাছা, ঝোপঝাড়, জঙ্গল, বদ্ধ জলাশয় পরিষ্কার রাখা।

এডিস মশা মূলত স্বচ্ছ পানির মধ্যে ডিম পাড়ে তাই তাই ফুলদানি, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার, টব, পানির ট্যাংক নিয়মিত পরিস্কার করতে হবে। কোথায় যাতে পানি জমে না থাকে সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।

এডিস মশা যে কোনো সময়ই কামড়াতে পারে তবে সাধারণত সকাল ও সন্ধ্যায় সময়টাতে বিশেষ সতর্ক থাকা প্রয়োজন। মশরারি টাঙ্গিয়ে ঘুমাতে হবে। দিনের বেলা ঘরে খালি গায়ে থাকবেন না। সচেতনতাই পারে ডেঙ্গু ভাইরাস থেকে বাচাতে তাই সাবধানে থাকুন, ভালো থাকুন।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More