স্ট্রোক প্রতিরোধযোগ্য রোগ। তবে একবার আক্রান্ত হলে এর চিকিৎসা বেশ জটিল, দীর্ঘমেয়াদী এবং ব্যয়বহুল। আর তাই স্ট্রোক প্রতিরোধের চেষ্টা করাই উত্তম। স্ট্রোকের পূর্বাভাস বুঝবেন যেভাব সেটাও জানা দরকার।
স্ট্রোক কী:
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে, এমনকি মস্তিষ্কের কোষেও অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত সঞ্চালন প্রয়োজন। কোনও কারণে মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর পথ সংকীর্ণ হলে বা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের কোষ অক্সিজেনের অভাবে নিস্তেজ হয়ে যায়। এটাকেই স্ট্রোক বলা হয়।
স্ট্রোকের লক্ষণ কীভাবে বুঝবেন:
** হঠাৎ শরীরের একদিকে দুর্বল বা অবশ হয়ে যাওয়া।
** কথা অস্পষ্ট, জড়িয়ে যাওয়া বা একেবারে বুঝতে ও বলতে না পারা।
** চোখে ঝাপসা দেখা। কোনকিছু দুটো দেখা কিংবা একেবারেই না দেখা।
** হঠাৎ মাথা ঝিমঝিম করা বা ঘোরা।
** হতবিহবল হয়ে পড়া বা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা।
** মারাত্মক লক্ষণ হলো হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যথা, বমি, খিঁচুনি বা জ্ঞান হারিয়ে ফেলা।
স্ট্রোক কেন হয়?
** রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।
** মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। অনিয়ন্ত্রিত ব্লাড প্রেশার থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
** স্ট্রেস ও ডিপ্রেশনের কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।
** যারা সারাদিন বসে বসে কাজ করেন অর্থাৎ কায়িক পরিশ্রম হয় না তাদের এই রোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে বেশি।
** স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে ডায়েটে ভাজাপোড়া কিংবা ফাস্ট ফুড বেশি রাখলেও স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
** ধূমপান স্ক্রোকের সবচেয়ে বড় কারণগুলোর একটি।
** অতিরিক্ত মদ পানের অভ্যাস স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
** ডায়াবেটিসের যেসব রোগী এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট বা এক্সারসাইজ করেন না, তাদেরও স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি।
** হার্টের অসুখ থাকলে ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি।
স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়:
** ওজন কমাতে গিয়ে সুষম খাবার একেবারে বাদ দেয়া যাবে না। বরং ডায়েটে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও ফল রাখুন।
** সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন আধ-ঘণ্টা করে দ্রুত পা চালিয়ে হাঁটুন।
** ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন।
** প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান।
** ব্লাড প্রেশার আর সুগার থাকলে নিয়ম মেনে নিয়ন্ত্রণে রেখে চলুন।
** ভুঁড়ি বাড়তে দেওয়া চলবে না।
** শরীরচর্চার সময় যেনো অত্যধিক পরিশ্রম হয়ে যায়।
** যদি আচমকা হাত পা অথবা শরীরের কোনও একটা দিক অবশ, অসাড় লাগে কিংবা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধে হচ্ছে বলে মনে হয় অথবা ঢোক গিলতে কষ্ট হয়, তাহলে এক মুহূর্ত দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
সূত্র: জিনিউজ
আরো পড়ুন:
ত্বকে বয়সের ছাপ দূর করতে করনীয়
স্ট্রোকের পূর্বাভাস বুঝবেন যেভাব
সুস্থ থাকতে নিয়মিত খান এই ফলটি