দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর দিকে মাস্কের চাহিদা ছিলো তুঙ্গে। ফলে নানা ব্র্যান্ডের মাস্ক বাজারে এলেও দাম ছিলো আকাশছোঁয়া। লকডাউন শেষে সীমিত পরিসরে সবকিছু চালু হলে মাস্কের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। আর এতে অলিগলি থেকে শুরু করে ফুটপাত, বাজার, ফার্মেসি, মুদি দোকান ও অনলাইনে সয়লাব নানা ধরনের মাস্কে। যেকোনো দামে দেদারসে বিক্রি হয়েছে সার্জিক্যাল মাস্ক।
এক পিচ সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। যা ইতিহাসের পাতায় বড় অক্ষরেও লেখা থাকবে। সেই মাস্ক এখন হাঁকডাক করেও ৩ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন না খুচরা বিক্রেতারা। করোনার সংক্রমণে মৃত্যু অব্যাহত থাকলেও মাস্ক ব্যবহারের আগ্রহ আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে। বর্তমানে যা কিছু চাহিদা তা সার্জিক্যাল মাস্কের। ১০ টাকায় তিনটি মাস্কও কিনতেও অনীহা মানুষের।
দোকানিরা এখন আর বাড়তি মাস্ক মজুদ রাখেন না। আগে যেসব মাস্ক মজুদ আছে সেগুলো বিক্রিয়ের জন্য প্রাণপণ চেষ্ট করে যাচ্ছেন।
সদরঘাট, গুলিস্তান, শাহবাগ, ফার্মগেট, ধানমন্ডি, লালবাগ এলাকার বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানে সার্জিক্যাল মাস্ক বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকায়। অথচ করোনা কালের শুরু দিকে দেশে মাস্ক নিয়ে যখন হৈ-হুল্লোড় ছিলো, তখন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর ১১ মার্চ সার্জিক্যাল মাস্কের দাম নির্ধারণ করেছিলো।
তিন স্থরের একেকটি সার্জিক্যাল মাস্কের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো সর্বোচ্চ ৩০ টাকা। তা সময়ের ব্যবধানে কমে হয়েছে মাত্র তিন টাকা। একইভাবে কমেছে ফিল্টারযুক্ত কাপড়ের মাস্কের দাম। বর্তমানে ১০ টাকায় মিলছে এসব মাস্ক। চাহিদা না থাকায় কমে এসেছে কেএন-৯৫ মাস্কের দাম। খুচরা বাজারে ৪০-৫০ টাকা এবং পাইকারি বাজারে ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব মাস্ক।
অস্থায়ী দোকানের মতো রাজধানীতে মাস্ক বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ হকাররাও। একই মাস্ক বিক্রি হচ্ছে মুদির দোকানে। ফার্মেসিগুলোতে উন্নত ও নিম্নমানের সব মাস্কই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু মাস্ক কেনার মতো ক্রেতা নেই। মাস্কের পর্যাপ্ত যোগান এবং দাম কম হলেও বিক্রির পরিমাণ দিন দিন কমে আসছে বলে জানিয়েছে নগরীর পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।
মরপুর ১০ মন্বর গোলচত্ত্বর এলাকার এক মাস্ক বিক্রেতা বলেন, সার্জিক্যাল মাস্ক কিছু চলে, তাও আগের চাইতে কম দামে ১০ টাকায় তিনিটি বিক্রি করি। বেচাবিক্রি নাই। খুব প্রয়োজন না হলে কেউ মাস্কের দিকে তাকায়ও না। আগে একটি মাস্ক বিক্রি করতাম ২০- ৩০ টাকায়; এখন ৩ টাকা করে বিক্রি করি তাও বিক্রি হয় না।