নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ওই নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনার আগে আরও দুইবার ধর্ষণ করেছিল দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তদলের কাছে নির্যাতনের শিকার ওই নারী মঙ্গলবার এমন অভিযোগ করেছেন।
তদন্ত শেষে মঙ্গলবার (৬ অক্টোবর) বিকালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরিচালক (অভিযোগ ও তদন্ত) ও তদন্তদলের প্রধান আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
আল-মাহমুদ ফয়জুল কবীর বলেন, ভুক্তভোগী ওই নারীর অভিযোগ অনুযায়ী দেলোয়ার প্রায় সময় তাকে অশোভন প্রস্তাব দিতেন। প্রস্তাবে সাড়া দিতে হুমকি-ধমকিও দেওয়া হতো। প্রায় বছর খানেক আগে দেলোয়ার তার ঘরে ঢুকে তাকে প্রথমবার ধর্ষণ করেন। ভয়ে ও লোকলজ্জায় তিনি এ ঘটনা প্রকাশ করার সাহস পাননি।
এরপর গেল রমজানের আগে দেলোয়ার তার সহযোগী কালামের মাধ্যমে ওই নারীকে একটি নৌকায় ডেকে পাঠান। সেখানে দেলোয়ার ও কালাম দুজনই তাকে ধর্ষণ করতে চায়। এ সময় তিনি দেলোয়ারের কাছে অনুনয়-বিনয় করলে কালামকে টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেন দেলোয়ার। পরে নৌকায় দ্বিতীয়বার তাকে ধর্ষণ করে দেলোয়ার।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের পরামর্শ মতে তারা ওই নারীকে দিয়ে দেলোয়ার ও কালামের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক একটি মামলা করাবেন। এ ক্ষেত্রে কমিশনের প্যানেল আইনজীবীরা আদালতে মামলাটি পরিচালনা করবেন।
এ ব্যাপারে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, আগের অভিযোগের পাশাপাশি ওই নারী এখন যেসব নতুন অভিযোগ করেছেন সেগুলোও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, দ্যাম্পত্য কলহের জেরে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে একলাশপুরে বাবার বাড়িতে থাকতেন ওই নারী। প্রায় ১০ বছর পর গত ২ সেপ্টেম্বর স্বামী তার কাছে এলে দেলোয়ার বাহিনীর ক্যাডাররা ওই নারীর ঘরে ঢোকে। এরপর তারা ওই নারীর স্বামীকে পাশের রুমে বেঁধে রেখে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে।
এরপর থেকে ওই নারী এলাকাছাড়া হয়ে পালিয়ে থাকলেও তাকে মোবাইলফোনে নানা ধরনের হুমকি ও কুপ্রস্তাব দিতো দেলোয়ারবাহিনী। তিনি ফিরে না আসায় গত ৪ অক্টোবর সে ভিডিও ফেসবুকে প্রকাশ করে দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে পুলিশ ও র্যাব তাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামে।
এদিকে ভুক্তভোগী এ ঘটনায় মামলা দায়ের করলেও দেলোয়ারের নাম উল্লেখ করেননি। গত রবিবার রাতে র্যাবের একটি দল সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে অস্ত্রসহ নারী নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে।