রাত ১২:৩২ বুধবার ১৪ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ১লা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম অন্যান্যইতিহাস মানব বিবর্তনের আদ্যোপান্ত

মানব বিবর্তনের আদ্যোপান্ত

লিখেছেন Fahmid Souror
Spread the love

যেসব পাখি আমরা আমাদের আশেপাশে দেখি তারা নাকি ডায়নোসরদের একমাত্র জীবিত বংশধর। অবাক করার মতো বিষয় তাই না। ডায়নোসরদের প্রজাতির মধ্যে কয়েকটার ডানা ছিল আর তারা উড়তে পারতো। ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হানে একটি অতিকায় গ্রহানু। এরই কারণে মারা পড়ে সব ডায়নোসর। যারা উড়তে সক্ষম ছিল কেবল তারাই বেচে রইল। বিবর্তনের ফলে একটা সময় তারা ছোট পাখিতে পরিণত হলো। বিজ্ঞানের উত্তোরত্তর অগ্রযাত্রার কারণে মানুষসহ পৃথিবীর অনেক প্রাণী ও উদ্ভিদের বিবর্তন সম্পর্কে জানতে পেরেছি আমরা। আজকের আলোচনায় আমরা মানুষের বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করবো।

গত কয়েকশ বছরে বিজ্ঞানের অসম্ভব উন্নতি হলেও মানুষের বিবর্তন নিয়ে রয়েছে প্রচুর বিতর্ক। এক শ্রেণির মানুষ যারা বিবর্তনকে ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন। বিপরীত মতের অনুসারীদের মত হলো, সৃষ্টির উৎপত্তি সম্পর্কে জানার অর্থ হলো ইশ্বরকে জানা। তাই বিবর্তনবাদ ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। যাই হোক, আজ আমরা বিজ্ঞানের আলোকে মানুষের বিবর্তনকে জানার চেষ্টা করবো। অন্য আর একদিন না হয়, ধর্মের আলোকে বিবর্তনের ব্যাখা করা যাবে।!

বিবর্তন হলো এমন একটি জীববৈজ্ঞানিক ধারণা। প্রজন্ম-প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য কিভাবে পরিবর্তন হয় সেটা জানার জন্য যে অধ্যয়ন তাকেই বিবর্তনবাদ বলে। আমরা জানি যে, জীবন্ত প্রাণের বংশগতির আণবিক একককে জিন বলা হয়। তার অর্থ হলো, কারো শরীরের বংশগতি নিয়ে গবেষণা করলে বোঝা যাবে তার পূর্ব পুরুষদের গঠন, আচরণ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানা যাবে। মূলত এটাই বিবর্তন সংক্রান্ত গবেষণার মূলকথা।

মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর বিবর্তন নিয়ে দুই একটা গবেষণা হলেও তার সবটাই ছিল ধর্মকে কেন্দ্র করে। ১৮শ সালের শুরু দিকে বৈজ্ঞানিকভাবে সর্বপ্রথম বিবর্তন সংক্রান্ত আলোচনা করেন জঁ বাতিস্ত ল্যামার্ক। ল্যামার্কের বিবর্তনবাদ সংক্রান্ত আলোচনার মূল বিষয় ছিল-পরিবেশের প্রভাবে এবং জীবের নিজের প্রচেষ্টায় জীবদেহের পরিবর্তন ঘটে। জীব নিজস্ব প্রয়োজনে নতুন বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি করে। জীবের জীবন কালে যেসব বৈশিষ্ট্য অর্জিত হয় তা পরবর্তী প্রজন্মের জীবের সঞ্চারিত হয়।

ল্যামার্কের তত্ত্ব সেই সময় বেশ আলোচনার জন্ম দিলেও খুব বেশি গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বিজ্ঞানী অগাস্ট ভাইসম্যান ল্যামার্ককে ভুল প্রমাণিত করেন। বিবর্তনবাদ সংক্রান্ত আলোচনা জনপ্রিয় হয় মূলত চালর্স ডারউইনের তত্ত্বের মাধ্যমে। ডারউইন তার অরিজিন অফ স্পেসিস গ্রন্থে বলেন, বানর, শিম্পাঞ্জি, ওরাংগুটাং, গরিলা, মানুষ সবাই একই পূর্বপুরুষের বংশধর। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। তখনকার মানুষ প্রচার করতে শুরু করেন ডারউইন নাকি বলেছেন, মানুষ বানর থেকে এসেছেন।

ডারউইনের কথা সত্য না মিথ্যা সেটা আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। বছরের পর বছর ধরে কিভাবে এবং কোন পরিস্থিতিতে মানুষের রূপ বদলেছে মূলত সেটাই আজ আমরা আলোচনা করবো।

১৯৯৩ সালে টিম হোয়াইটের নেতৃত্বে একটি দল ইথিওপিয়ার আরামিসে একটি হাতের টুকরা পান। এরপর সেখানে মাথার খুলি, দাঁতের চোয়াল ও আরো কিছু জীবাশ্ম পাওয়া যায়। জীবাশ্মগুলো নিয়ে শুরু হয় গবেষণা। প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে চলে সেই গবেষণা। ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় গবেষণার ফলাফল। সারা বিশ্বে আলোড়ন তৈরি করে সেই গবেষণার ফল। জানা যায় সেখানে যে হাড়গুলি পাওয়া যায় সেগুলি ৪৪ লক্ষ বছরের পুরনো!

এরপরই বিবর্তন নিয়ে শুরু হয় জোর আলোচনা-সমালোচনা। পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা যে ৫০ লাখ বছরেরও বেশি সময়ের সেটা প্রমাণ হয়ে যায়। গবেষকদল এই জীবাশ্ম কঙ্কালের নাম দেন আর্ডি। ১২৫ টুকরা জীবাশ্ম নিয়ে আর্ডির পুরো স্কেচ তৈরি করা হয়। এরপরই বদলে যায় মানুষের চিরায়ত ধারণা।

আর্ডি ছিল একজন নারী যার ওজন ছিল প্রায় ৫০ কেজির মতো। এবং ৩.৯ ফুট উচু। মানব ইতিহাসের একেবারে প্রারম্ভিক পথচলা খুঁজতে আর্ডির আবিস্কার ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আর্ডি ‘আর্ডিপিথেকাস র‍্যামিডাস হোমিনিনের’ প্রজাতি, এর গণের নাম ‘আর্ডিপিথেকাস’। আর্ডির শারিরতাত্বিক বিশ্লেষণ দেখে বোঝা যায়, এর হাত ও পায়ে দশটি করে আঙুল ছিল তবে পায়ের আঙুলগুলো ঠিক বর্তমান সময়ের মানুষের মতো নয়, কিছুটা শিম্পাঞ্জির মতো। পা দিয়ে গাছে উঠতে পারতো আর্ডি। সেই কারণেই হয়তো তার পায়ের আঙুল ছিল ভিন্ন।

এর আগে ১৯৭৪ সালে সেই ইথিওপিয়াতেই শতাধিক হাড়ের টুকরা পাওয়া যায়। যার নাম দেওয়া হয় ‘লুসি’। প্রায় ৩২ লক্ষ বছর আগে লুসি পৃথিবীতে বসবাস করত। ‘অস্ট্রালোপিথেকাস আফেরেন্সিস’ গোত্রের লুসি সোজা হয়ে হাঁটতো। কারণ, লুসির শ্রোণীচক্রের আকৃতি ছিল সোজা হয়ে চলতে পারা একটি মানুষের মতো। লুসির হাঁটু ও পায়ের কব্জি দুই পায়ে হাঁটার জন্য তা ছিল উপযুক্ত। লুসির আবিষ্কার ছিল মানুষের ক্রমবিকাশের প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে জানার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লুসি আবিস্কার হওয়ার পর তাকে পৃথিবীর প্রথম দিককার মানুষ মনে করা হতো তবে আর্ডির আবিস্কারের ফলে আরো দীর্ঘ হতে থাকে মানুষের আদিনিবাস খোঁজার প্রক্রিয়া।

লুসি ও আর্ডির মধ্যে ছিল দারুণ সব মিল। দুজনেই তাদের বেশিরভাগ সময় গাছেই কাটাতো এই কারণে পায়ের আঙুলগুলো ছিল মানুষের চেয়ে ভিন্নতর। কয়েক মিলিয়ন বছর পরে জন্ম হওয়ায় লুসির মস্তিস্কের ওজন আর্ডির চেয়ে বেশি ছিল। তর্বে বর্তমান মানুষের তুলনায় তাদের মস্তিস্কের ওজন ছিল অনেক কম, প্রায় ২০ ভাগের মতো। ২০১৬ সালের একটি গবেষণায় জানা যায়, সম্ভবত গাছ থেকে পড়েই লুসির মৃত্যু হয়। তার ডান পায়ের ফিমারের ক্ষত, মেন্ডিবলে চিড় দেখে এমন অনুমান করেন বিজ্ঞানীরা। আর্ডি ও লুসির আবিস্কারের পর এটা এখন পর্যন্ত মোটামুটি প্রমানিত যে, আমাদের পূর্বপুরুষদের বাস আফ্রিকা মহাদেশে ছিল।

এবার আমরা মানুষের বিবর্তনের পর্যায় এবং কেমন ছিল তাদের জীবন যাপন সেগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। মানুষ, শিম্পাঞ্জী, বানর, ওরাং ওটাং যে একই পূর্ব পুরুষের বংশদল সেটা মোটামুটি স্বীকৃত। শিম্পাঞ্জির সাথে মানুষের প্রায় ৯৬% এর ও বেশি জেনেটিক মিল আছে। কিন্তু এমন কি হলো যার কারণে মানুষ দলছুট হয়ে নতুন একটি প্রজাতির সৃষ্টি করলো। আদিম জীবন থেকে কিভাবেই বা সৃষ্টি হলো আধুনিক সভ্যতার?

বিবর্তন বিজ্ঞানীদের মতে প্রায় ৭০-৮০ মিলিয়ন বছর পূর্বে একই সাথে ছিল মানুষ-বানর-শিম্পাঞ্জি। একটা সময়, অন্যদের সাথে মানুষও গাছে গাছে চড়ে বেড়াতো, শিকার করতো, ফল খেয়ে জীবন ধারণ করতো। উন্নত মস্তিস্ক ও বিচারবুদ্ধির কারণে কয়েক মিলিয়ন বছর পর মানুষ গাছে ওঠার প্রবণতা কমিয়ে দিয়ে মাটিতেই বেশি থাকা শুরু করে। এর প্রভাবও দেখা যেতে থাকে। মানুষের পায়ের আঙুলগুলো চলে আসতে থাকে সামনের দিকে। একটা সময়, খুব সম্ভবত ৩০ মিলিয়ন বছর আগে মানুষের পায়ের পাতা ঠিক আমাদের মতো হয়ে যায়। এছাড়া অভিযোজন, প্রজনন ক্ষমতাও মানুষকে আলাদা করেছে বানর-শিম্পাজি থেকে। এই সময়ে মানুষ আফ্রিকা থেকে ছড়িয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে।

এবার আমরা জানবো আদিম মানুষ থেকে সভ্য মানুষের পথচলাটা কেমন ছিল। প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিলিয়ন বছর আগে ‘প্যারাপিথেকাস’ প্রজাতির মানুষের খোঁজ পাওয়া যায় প্রাচীন মিশরে। আধুনিক মানুষের সবচেয়ে পুরনো বংশধররা এখানেই বাস করতো। খুব সম্ভবত এই সময়েই শিম্পাঞ্জি গোত্রের পেছনের লেজটি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যায়। এই প্রজাতিটি খোলা জায়গায় বসবাস করতে বেশি ভালোবসতো।

ডারউইনের অরিজিন অফ স্পেসিস প্রকিাশিত হওয়ার তিন বছর আগে ১৮৫৬ সালে ফ্রান্সের জীবাশ্মবিদ এডওয়ার্ড লার্টেট মানুষের এক ধরনের পূর্বপুরুষ সম্পর্কে বিশ্বকে পরিচিতি করান। ‘ড্রিএপেথিকাস’ প্রজাতিটি খুব সম্ভবত আফ্রিকা অঞ্চলে ছিল। শিকারীদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য পশুপালনের কৌশলটা মানুষ এই প্রজাতির কাছেই শিখেছিল। ১০-১৫ মিলিয়ন বছর আগে এই প্রজাতিটি ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। স্পেন, অস্ট্রিয়া, ফ্রান্সের বিভিন্ন জায়গায় এই প্রজাতির জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। এদের আচরণ আচরণ অনেকটা গরিলার মতো ছিল। খাবার সঞ্চয় করা, শীত বা গরমে উন্নত বাসস্থান তৈরির প্রবণত ছিল তাদের মধ্যে। একটা সময় তারা এশিয়া অঞ্চলে প্রবেশ করে।

মানুষের সবচেয়ে প্রাচীন পুর্বপুরুষ হিসেবে ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ গোত্রের খোঁজ পাওয়া যায়। ৪২ লক্ষ বছর থেকে ১৯ লক্ষ বছর পর্যন্ত এই প্রজাতিটি আফ্রিকা অঞ্চলে বসবাস করকো। অস্ট্রালোপিথেকাস ঘরি, অস্ট্রালোপিথেকাস সেদিবা, অস্ট্রালোপিথেকাস আফ্রিকানস, অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যানামেন্সিস, অস্ট্রালোপিকেথাস আফ্রেন্সিস এই গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত। এই গোত্রের প্রাণীদের দেহ ঘন চুল দিয়ে আচ্ছাদিত থাকতো ঠিক এপসের মতো। লুসি এই গোত্রেরই ছিল।

সন্দেহাতীতভাবে প্রথম যে প্রজাতিটিকে আধুনিক মানুষের সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয় তা হচ্ছে ‘হোমো ইরেক্টাস’। ১৯ লক্ষ বছর পূর্বে পৃথিবীর বুকে বিচরণ করতো এই প্রজাতিটি। হোমো হ্যাবিলিস এবং হোমো রুডলফেনসিস এর সবচেয়ে নবীন প্রজাতির মানুষদের চোয়াল, দাঁত ছিল মানুষের মতো এমনকি আধুনিক মানুষের আয়তনের সমান ছিল তাদের মস্তিষ্ক। এই কারণে আগুন জ্বালানো, অস্ত্র বানানো, হাত পা নেড়ে আওয়াজ করা, দলবদ্ধ হয়ে থাকার কৌশল রপ্ত করেছিল তারা।

ক্রমেই এই প্রজাতির সদস্যরা আফ্রিকার ক্রান্তীয় অঞ্চল, ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রজাতিটি ছিল মাঝারি উচ্চতার এবং দুই পায়ে সোজা হয়ে হাঁটতে পারতো। পশু শিকার ছিল তাদের প্রধান পেশা। এরা অনেকটা যাযাবরে প্রকৃতির ছিল।

মানুষের অনেক পূর্ব পুরুষের মতো পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়া আরেকটি বড় প্রজাতির নাম ‘নিয়ান্ডারথাল’। নিয়ান্ডাথালদের বিকাশ ঘটেছিলো ইউরোপ এবং এশিয়াতে। বর্তমান মানুষের মতো এই গোত্রের মানুষ একই সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে। সেই কারণে নিয়ান্ডারথালরা হোমো সেপিয়েন্সদের সমসাময়িক ও প্রায় একই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। তবে মানুষের সাথে প্রতিযোগিহতায় টিকতে পারেনি বেশি শারিরিক সক্ষমতার এই প্রজাতিটি।

ধারণা করা হয়, নিয়ান্ডারথাল ও হোমো সেপিয়েন্স প্রায় একই সময় পৃথিবীকে অবস্থান করতো। নিয়ান্ডারথালদের ছিল বিশাল মস্তিষ্ক, বড় শরীর। মস্তিষ্ক ও শরীর প্রাপ্তবয়স্কের আকার ধারণে বেশি সময় নিত বলেই তাদের মস্তিষ্কের গঠন হত ধীরগতিতে। এই প্রজাতির মানুষরা অস্ত্র বিদ্যায় পারদর্শী ছিল। তারা আগুনের বেশ ভালো ব্যবহার করতো। অন্যদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার কৌশলও ছিল বেশ ভালো। মানুষের চেয়ে শিল্প চর্চায় কোনো অংশেই কম ছিল না তারা।

একটা সময় নিয়ান্ডারথালরা হয়ে ওঠে দুর্ধষ। নিজেদের মানুষদের মেরে তাদের মাংস খাওয়া শুরু করে। এদের শরীর বড় হলেও বুদ্ধিতে তারা ততোটও ভালো ছিল না। এই কারণে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধে সেভাবে পেরে উঠতো না। খারাপ আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে না পেরে একটা সময় তারা হারিয়ে যায় পৃথিবী থেকে। তবে হাজার বছর ধরে তারা পৃথিবীতে টিকে ছিল।

এবার কথা বলবো আধুনিক মানুষের কথা, ‘হোমো সেপিয়েন্স’দের। বর্তমান মানুষের যে অবয়ব, বৈশিষ্ট্য তার গোড়াপত্তন হয়েছিল ১ লাখ ৩০ হাজার বছর আগে। অন্যান্য প্রজাতির মতো হোমো সেপিয়েন্সদেরও পৃথিবীতে টিকে থাকতে লড়াই করতে হয়েছে। হোমো হ্যাবিলিস, হোমো ইরেক্টাস, হোমো এন্টেসেসর, হোমো এরগাস্টার, হোমো হেইডেলবার্জেন্সিস, হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস, হোমো নালেদি, ডেনিসোভা হোমিনিন ও হোমো ফ্লোরেসিয়েন্সিস, কেনিয়ানথ্রোপাস প্লাটিওপস, অস্ট্রালোপিথেকাস বাহরেলগাজালি, ডেইরিমিডাসহ হোমো গণের অন্য সব প্রজাতিই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অভিযোজনে সক্ষম, ভাষার ব্যবহার, ধাতুর ব্যবহার, উদ্ভাবনী শক্তি, দলগত হয়ে থাকার প্রবণতা, প্রয়োজনে আক্রমনাত্মক মনোভাব, উত্তম মস্তিস্কের কারণে হোমো সেপিয়েন্সরাই পৃথিবীতে এখন পর্যন্ত টিকে আছে।, হয়তো টিকে থাকবে শেষ পর্যন্ত।

ওহ, ডারউনের বিবর্তনবাদ নিয়ে কথা হচ্ছিল আলোচনার শুরুতে। থাক না আজ, অন্য আর একদিন না হয় চার্লস ডারউইনের পৃথিবী কাঁপানো সেই তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More