বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যার মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে রয়েছে রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। রায়ে মিন্নিকে এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছেন আদালত। ফলে মিন্নির বর্তমান অবস্থান কনডেম সেলে।
জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে শতাধিক নারীর ফাঁসির আদেশ হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ফাঁসি কার্যকর হয়নি। তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন কারা ভোগ করার পর ছাড়া পেয়েছেন। কেউ কেউ মারা গেছে। আবার কারো কারো আপিলে শাস্তি কমেছে।
তাই মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মিন্নির ফাঁসির রায় কার্যকর নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। কেননা দেশে আজ পর্যন্ত কোনো নারী আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়নি। এদিকে মিন্নির এই রায় নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা। নানা প্রশ্নের মধ্যে উঠে এসেছে অসংখ্য অজানা তথ্য।
এদিকে রায়ের পর মিন্নির পরিবার ও তার আইনজীবীরা শতভাগ আশাবাদি যে, উচ্চ আদালতে মিন্নির সাজা কমবে অথবা খালাস হয়ে বাড়ি ফিরবেন তিনি। তবে যে যাই বলুক সার্বিক পর্যবেক্ষণে মিন্নির জন্য যে একটা সুখবর রয়েছে তা বলাই যায়।
কারা সূত্রে জানা গেছে, দেশের কারাগারগুলোতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারীদের মধ্যে কেউ কেউ ১০-১৫ বছর ধরে কনডেম সেলের বাসিন্দা। তাছারা এখনও পর্যন্ত কোনো নারী আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে এক কারারক্ষী জানান, তিনি ২৮ বছর ধরে চাকরি করছেন, আজ পর্যন্ত কোনো নারী আসামির ফাঁসি হয়েছে, এমন কথা তিনি শোনেননি।
জানা গেছে, ২০০৭ সালে কাশিমপুরে দেশের একমাত্র মহিলা কারাগার উদ্বোধন করা হয়। দেশের প্রতিটি কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ থাকলেও সেখানে কোনো ফাঁসির মঞ্চ নেই। অতীতে কোনো নারী আসামির ফাঁসি কার্যকরের রেকর্ড না থাকায় ফাঁসির মঞ্চ বানানো হয়নি।
নিয়মানুযায়ী ফাঁসির আসামিরা সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা না করলে ফাঁসি থেকে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। তবে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে, এমন খবরও শোনা যায়নি।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে ৪৯ জন নারী ফাঁসির দণ্ড মাথায় নিয়ে বিভিন্ন কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি আছেন। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের থাকার এই সেলের সর্বশেষ বাসিন্দা হয়েছেন বরগুনার আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। এখন দেখার পালা মিন্নির ভাগ্যে কি আছে?