সকাল ৬:০৪ বৃহস্পতিবার ১৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ২রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম ফিচার শুভ জন্মদিন গুরু

শুভ জন্মদিন গুরু

লিখেছেন sayeed
Spread the love

পুরো নাম মাহফুজ আনাম জেমস। এদেশের রক গানের ভক্তদের কাছে তিনি গুরু নামেই পরিচিত। উপমহাদেশের অন্যতম সেরা রকস্টার জেমস এর জন্মদিন। ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন জেমস। তার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। দুরন্ত বিডি ডটকম পরিবারের পক্ষ থেকে রইল তার প্রতি শুভেচ্ছা ও জীবনের নতুন বছরে অভিনন্দন।

জেমসের জীবন অনেক গল্পের। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মচারি, যিনি পরবর্তীতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরিবারের অমতেই সংগীত চর্চা শুরু। সংগীতের নেশায় বাবার সঙ্গে গান নিয়ে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। চট্টগ্রামের আজিজ বোর্ডিং নামক একটি বোর্ডিং-এ তিনি থাকতে শুরু করেন। সেখানে থেকেই তার সংগীতের ক্যারিয়ার শুরু।

১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ফিলিংস’ নামে একটি ব্যান্ড। জেমস নিজেই ব্যান্ডের প্রধান গিটারিস্ট ও ভোকালিস্ট ছিলেন। ১৯৮৭ সালে তার প্রথম অ্যালবাম ‘ষ্টেশন রোড’ প্রকাশ পায়। পরে ১৯৮৮ সালে ‘অনন্যা’ নামের অ্যালবাম রিলিজ করে সুপারহিট হয়ে যান জেমস। এরপর ১৯৯০ সালে ‘জেল থেকে বলছি’, ১৯৯৬ ‘নগর বাউল’, ১৯৯৮ সালে ‘লেইস ফিতা লেইস’, ১৯৯৯ সালে ‘কালেকশন অফ ফিলিংস’ অ্যালবামগুলো ফিলিংস ব্যান্ড থেকে বের হয়।

এছাড়াও জেমসের অন্যান্য অ্যালবামগুলো হল নগর বাউল থেকে ‘দুষ্টু ছেলের দল’, ‘বিজলি’। একক অ্যালবাম ‘অনন্যা’, ‘পালাবি কোথায়’, ‘দুঃখিনী দুঃখ করোনা’, ‘ঠিক আছে বন্ধু’, ‘আমি তোমাদেরই লোক’, ‘জনতা এক্সপ্রেস’, ‘তুফান’, ‘কাল যমুনা’ ।

চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেও সফল হয়েছেন জেমস। তার বেশ কিছু গান চলচ্চিত্রে সুপারহিট হয়ে আছে। ‘দেশা দ্য লিডার’, ‘সত্তা’ ছবির জন্য গান করে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।

জেমসের জনপ্রিয়তা শুধু দেশে নয়, আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলেও ব্যাপক জনপ্রিয় নগরবাউল ব্যান্ডের এই তারকা। পাশের দেশ কলকাতাতেও সেই নব্বই দশক থেকে একটি প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে, গান করেছে তাকে অনুসরণ করে।

বাংলা গানের পাশাপাশি হিন্দি গানে কণ্ঠ দিয়েও জয় করেছেন লক্ষ ভক্ত শ্রোতার হৃদয়। বলিউডে তার গাওয়া ‘ভিগি ভিগি’ [গ্যাংস্টার], ‘চল চলে’ [ও লামহে] এবং ‘আলবিদা’, ‘রিস্তে’ [লাইফ ইন অ্যা মেট্টো], ‘বেবাসি’ [ওয়ার্নিং] গানগুলো উল্লেখযোগ্য।

কখনো কনডেম সেলে ফাঁসির আসামীর মৃত্যুর দিন গোনার হাহাকার, কখনোবা বঞ্চিত শ্রমিকের বিপ্লবী জীবন, আশা-হতাশার খাতায় লেনদেনের গড়মিল চিৎকার করে উঠেছে তার কণ্ঠে। তার ভরাট কণ্ঠে বঙ্গবন্ধু হেঁটে যান মহামানবের মতো, তার কণ্ঠের টানে বখাটে ঘরে ফিরেছে বহুবার।

তার মাতাল কণ্ঠের উন্মাদনায় ঘর ছেড়েছে বহু বহু নাম না জানা প্রেমিকা, বিরহে কাতর প্রেমিকের বুকফাটা আর্তনাদে বেরিয়ে এসেছে, ‘আমি তারায় তারায় রটিয়ে দেবো তুমি আমার’। তার গানে বাবা-মায়ের প্রতি সন্তানকে করেছে আরও নমনীয়, কোমল।

জেমস ভক্তদের তিনি আদর করে ডাকেন, ‘দুষ্টু ছেলের দল’ হিসেবে। জন্মদিনের প্রতিক্রিয়ায় জেমস বলেন, এখন যে সময় চলছে, এটা আসলে আমাদের জন্য বড় পরীক্ষা। আমরা তো প্রচণ্ড অস্থির। তারই ফল এখন ভোগ করছি। তাই বলে এই ঘরবন্দি সময়ে অস্থির হলে চলবে না। আমাদের আরো ধৈর্য ধরতে হবে। এই দিনে আমার দুষ্টু বন্ধুদের প্রতি একটাই আবেদন, অস্থির হয়ো না, ধৈর্য ধরো। সুদিন ফিরবেই।

নিভৃতচারী জেমস বরাবরই আনুষ্ঠানিকতা থেকে নিজেকে দূরে রাখেন। এই করোনাকালে সেই দূরত্ব আরো বেড়েছে। মহামারি করোনার জন্য জন্মদিনকে ঘিরে আর কোনো আনুষ্ঠানিকতায় থাকছেন না জেমস।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More