নভেম্বরের মাঝামাঝিতে এইচএইসি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে সরকার। তবে পূর্ণ নম্বর কমিয়ে সব বিষয়েই পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বোর্ডগুলোকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে এ খবর প্রকাশ করেছে অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগোনিউজ ২৪।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিদিন একটি বিষয়ের পরীক্ষা নেয়া হবে।
মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার বরাতে এতে বলা হয়, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনে দুটি বিষয়ে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। প্রতি বিষয়ে ৫০ শতাংশ নম্বর কমানোর প্রস্তাব আছে। সেক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে ব্যবহারিক নেই সেগুলোতে বহুনির্বাচনী ও সৃজনশীল উভয় অংশের পূর্ণমান থেকে ৫০ শতাংশ করে কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। যেগুলোতে ব্যবহারিক আছে সেগুলোতে ব্যবহারিক নম্বর ঠিক রেখে অবশিষ্ট অংশের (এমসিকিউ ও সৃজনশীল) নম্বর সমন্বয় করে পূর্ণ নম্বর ৫০ শতাংশ কমানো হবে।
অপর প্রস্তাবে কেবল এমসিকিউ কিংবা সৃজনশীল অংশের যেকোনো একটির পরীক্ষা নেয়ার বিষয় আছে। এ ক্ষেত্রেও ব্যবহারিকের নম্বর ঠিক রেখে বাকি অংশের ওপর নম্বর সমন্বয় করা হবে। করোনা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় রেখে নিজ নিজ কলেজকে ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
তবে মন্ত্রণালয় যে প্রস্তাব গ্রহণ করবে বোর্ডগুলো সেটিই বাস্তবায়ন করবে। এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় কমানোর বিষয়টি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
এর আগে গত ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বোর্ড চেয়ারম্যানদের বৈঠকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা শুরুর ব্যাপারে মতামত দেয়া হয়।
পরীক্ষার খসড়া রুটিন এখনও তৈরি হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে তারিখ ঘোষণার পর পরীক্ষার সময়সূচি তৈরি করা হবে।
মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, রুটিন তৈরির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি মাথায় রেখে নতুনত্ব আনার চিন্তা রয়েছে। সেটি হচ্ছে, দৈনিক একটির বেশি পরীক্ষা না রাখা এবং প্রত্যেক দিনই পরীক্ষা নেয়া।
স্বাভাবিক সময়ে মূল বিষয়গুলোর পরীক্ষার পরে বিভাগভিত্তিক সকালে ও বিকেলে দুটি করে পরীক্ষা রাখা হতো। ফলে সকালে বিজ্ঞানের পরীক্ষা হলে বিকেলে মানবিক বা ব্যবসায় শিক্ষার পরীক্ষা নেয়া হতো। একটি পরীক্ষার পরে কেন্দ্র পরিষ্কারের বিষয়টি সামনে রেখে দৈনিক একটি রাখার চিন্তা করা হচ্ছে। তবে ধর্মীয় ও সাপ্তাহিক ছুটি বাদে অন্যসব দিন পরীক্ষা নেয়া হবে।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে বোর্ডের এক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জানান, পরীক্ষার কেন্দ্র ও সিটপ্ল্যান চূড়ান্ত করা হয়েছে। এক বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থীদের ‘জেড’ আকারে বসানো হবে। প্রতি কেন্দ্রে গড়ে ৬৫০ জন করে পরীক্ষার্থী রাখার পরিকল্পনা আছে।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে বোর্ডগুলো সার্বিকভাবে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ মঙ্গলের বিষয়টি সামনে রেখে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পেলেই সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।
এর আগে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, পরীক্ষা হবে। কিন্তু বিষয় কমানো হবে না পূর্ণ নম্বর কমবে- সে রকম একাধিক বিকল্পই আছে।