গত ৯ বছর ধরে সিলেট এমসি কলেজে কমিটি না থাকলেও ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে মরিয়া ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ। চাঁদাবাজি, নির্যাতন ও খুনে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। আর কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, অপরাধে জড়িত সংগঠনের কেউই ছাড় পাবে না।
২০১২ সালের আগস্টে, ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংঘর্ষের জের ধরে, পুড়িয়ে দেয়া হয় সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। মামলায় আসামি করা হয় ২৯ জনকে। এরপর নতুন ভবনে পথচলা শুরু হয় ছাত্রাবাসটির। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি বিচার। এরপর বিভিন্ন সময় উত্তপ্ত থেকেছে সিলেটের প্রাচীন এই কলেজ ক্যাম্পাস। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের গ্রুপিংয়ে সংঘর্ষ, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি নেই। পদপদবী ছাড়াও একেক জন ক্যাডারে পরিণত হয়ে চাঁদাবাজি, খুন, গুম করে সব সময় আলোচনায়। অপরাধের সবশেষ তালিকায় যুক্ত হয়েছে স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ।
দেশ জুড়ে সমালোচনার মুখে থাকা সিলেট ছাত্রলীগের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে অপরাধীদের নামধারী কর্মী বলে দায় এড়াতে চাইছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব।
ছাত্রবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও ধর্ষণকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন সিলেটের বিশিষ্ট নাগরিক বৃন্দ। এক যৌথ বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন, এমসি কলেজ হোস্টেলে ৬ ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক তরুণী গণধর্ষণের ঘটনা কোনভাবে মেনে যায় না। এই গণধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশের মতো সিলেটবাসী মর্মাহত। তার দায় শাসকদল কোনভাবে এড়াতে পারে না।
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল নাহিয়ান জয় বলেন,সিলেটের এমসি কলেজে কোনো কমিটি নেই। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কিন্তু ছাত্রলীগের কোনো নেতা না। অপরাধীদের আমরা কখনই প্রশয় দেই না। অপরাধী সে যেই হোক, তাকে শাস্তি পেতে হবে।
উল্লেখ্য, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় গণধর্ষণের শিকার হন এক নববধূ। তার স্বামীকে বেঁধে রেখে গণধর্ষণ করে ছাত্রলীগের কয়েকজন ক্যাডার। ঘটনার রাত সাড়ে ১০টায় স্বামীসহ ওই নারীকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। ধর্ষণের শিকার নারীকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়।
স্বামীর সামনে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় চলছে দেশজুড়ে। আসামিদের ধরতে গিয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার কক্ষ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ আসামিদের হদিস করতে না পারলেও অভিযুক্তরা ফেসবুকে সরব রয়েছেন।