দুপুর ১২:৫৮ শুক্রবার ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ৩রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম দেশ ভাতিজির গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের পিতা চাচা!

ভাতিজির গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের পিতা চাচা!

লিখেছেন kajol khan
Spread the love

 

ধর্ষিতা ভাতিজির গর্ভে জন্ম নেয়া সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করে তার আপন চাচার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের হেসিয়ারা পূর্বপাড়া গ্রামে। ধর্ষক চাচা সোহেল মিয়া কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের হেসিয়ারা পূর্বপাড়া গ্রামের আবদুল মন্নানের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে ওই কিশোরীর মা ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার জন্য কুমিল্লার একটি ক্লিনিকে ৫-৬ দিন ভর্তি ছিলেন। তখন বাড়িতে কেউ না থাকায় সোহেল মেয়েটিকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করে। টানা চারদিন ধর্ষণের পর বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সে হুমকি দেয়। ভয়ে মেয়েটি কাউকে কিছুই জানায়নি।

কিছুদিন পরে তার মা অসুস্থতা নিয়ে মারা যায়। এরই মধ্যে ওই কিশোরী ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ে সালিস বসলে কিশোরী এ ঘটনার জন্য সোহেলকে দায়ী করলেও সে ঘটনাটি পুরোপুরি অস্বীকার করে। স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে গত ১৩ জুন কিশোরীর বাবা ধর্ষক সোহেলকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরদিন ১৪ জুন পুলিশ ধর্ষক সোহেলকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। ওই কিশোরী তার চাচা সোহেলকে দায়ী করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও প্রদান করেন। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। গত জুন মাসের শেষ দিকে সিজারের মাধ্যমে ওই কিশোরী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।

পরে নাঙ্গলকোট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যস্থতায় কিশোরীর কন্যা সন্তানটিকে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে এক নিঃসন্তান দম্পতির নিকট দত্তক দেওয়া হয়। সন্তানটিকে দত্তক দেওয়ার শর্ত ছিল, ডিএনএ পরীক্ষাসহ মামলার তদন্তের স্বার্থে যে কোনো সময় সন্তানটিকে হাজির করতে হবে। পরে কিশোরীর সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় পুলিশ।

সূত্র জানায়, গত ১৪ জুলাই সোহেল জামিনে মুক্ত হয়। ধর্ষিতার দাদা আবদুল মন্নান তার ধর্ষক ছেলের বিরুদ্ধে মামলা তুলে না নিলে ধর্ষিতা কিশোরীর বাবাকে সম্পত্তির ভাগ থেকে বঞ্চিত করাসহ ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেন। ধর্ষণের শিকার মেয়েটির কথা না ভেবে বৃদ্ধ আবদুল মন্নান কিশোরীর বাবাকে আপোসের জন্যও চাপ দিতে থাকেন।

এছাড়া কিশোরীর বাবাকে ভিটেমাটিসহ অন্য সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয় দেখিয়ে তার বাবা আবদুল মান্নান, বোন রেখা আক্তার, মামা ইমাম হোসেনসহ আত্মীয় স্বজনরা ধর্ষক ভাই সোহেলের জামিনের জন্য তাকে দিয়ে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আবেদন করান।

এদিকে, ধর্ষক সোহেল কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ফুলের মালা পরিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে রাজসিকভাবে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ধর্ষক সোহেল গ্রামের বাড়িতে পৌঁছার পর আত্মীয় স্বজনের জন্য ভুড়িভোজের আয়োজন করেন।

মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ধর্ষক সোহেলকে ফুলের মালা পরিয়ে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে বাড়ি নেওয়ার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। পরে বিষয়টি আদালতের নজর এলে জামিনের ১৫ দিন পর আদালতের বিচারক ধর্ষক সোহেলকে আদালতে হাজির হতে বলেন। এরপর সোহেল আদালতে হাজির হলে বিচারক তার জামিন বাতিল করে ফের তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, নাঙ্গলকোট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আখতার হোসেন বলেন, চাচার হাতে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীর কন্যা সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল ওই ধর্ষক চাচার সঙ্গে মিলে গেছে। ধর্ষক চাচাকে অভিযুক্ত করে দ্রুত চার্জশিট প্রদান করা হবে।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More