পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। গত তিনদিনে পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। আর ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকা।
পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, ভারত হুট করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দিলে দেশের বাজারে দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। ফলে পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি শূন্যের কোঠায় নামে। পেঁয়াজ নিয়ে ক্রেতারা বসে থাকলেও ক্রেতা আসছে না।
নিষেধাজ্ঞার আগে রফতানির অনুমতি পাওয়া ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ভারত। ইতোমধ্যে ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। রোববার বিকালের মধ্যে এসব পেঁয়াজ শ্যামবাজারের পৌঁছাতে পারে। আড়তে পৌঁছালে দাম আরও কমবে।
জানা গেছে, রাজধানীতে পেঁয়াজের সব থেকে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকা, যা গতকাল ছিল ৭০-৭২ টাকা। তার আগের দিন ছিল ৭৭ টাকা। ভারত রফতানি বন্ধ করায় এ পেঁয়াজের কেজি ৯০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
ভারতের পেঁয়াজ মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা কেজি, যা আগে ছিল ৬০-৬৫ টাকা। আজ পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরা বাজারে নতুন করে কমেনি।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে গতকালের মতো দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। আর আমদানি করা ভারতের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা।
এর আগে গত সোমবার হুট করে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। ফলে মঙ্গলবার ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজের দাম খুচরা বাজারে বেড়ে ১১০ টাকা হয়ে যায়। আর পাইকারিতে ৫০ টাকা থেকে বেড়ে পেঁয়াজের কেজি হয় ৮৫ টাকা।
এমন দাম বাড়ায় আতঙ্কিত হয়ে বাড়তি পেঁয়াজ কেনার হিড়িক পড়ে ক্রেতাদের। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে ক্রেতা সঙ্কট দেখা দেয় পেঁয়াজের বাজারে। যার প্রভাবে পাইকারি বাজারে কমে পেঁয়াজের দাম।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দফায় দাম কমে পাইকারিতে পেঁয়াজের কেজি ৭৭ টাকায় নামে। এ পরিস্থিতিতে খবর আসে নিষেধাজ্ঞার আগে রফতানির অনুমতি পাওয়া ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ বাংলাদেশকে দেয়ার অনুমতি দিয়েছে ভারত।
এতেই শনিবার দেশি ও আমদানি করা উভয় ধরনের পেঁয়াজের দাম আরও কমে যায়। আর পেঁয়াজ বোঝায় ট্রাক ভারত থেকে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করায় আজ পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম আরও কমল।
এ প্রসঙ্গে শ্যামবাজারের পাইকার বলেন, আজও কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম পাঁচ টাকা কমেছে। গতকাল যে পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি করেছি, আজ তা ৬৫ টাকায় বিক্রি করছি। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ গতকালের মতো ৫০-৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে যে পেঁয়াজ আসছে, তা হয় তো আজ বিকালে শ্যামবাজারে পৌঁছাবে। পৌঁছালে দাম আরও কমে যাবে। আমরাও চাই পেঁয়াজের দাম কমে আবার আগের মতো ৩০-৪০ টাকা হোক। কারণ পেঁয়াজের দাম বাড়ার কারণে আমাদের বিক্রি নেই।
আরেক ব্যবসায়ী বলেন, ভারত রফতানি বন্ধ করার পর দেশি পেঁয়াজ আমরা ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। আজ দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। এরপরও ক্রেতা নেই। লোকসানে মাল বিক্রি করতে হচ্ছে। ভারতের পেঁয়াজ পৌঁছালে দাম আরও কমতে পারে।
এদিকে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দামের বিষয়ে মো. সেলিম বলেন, আমার কাছে যে দেশি পেঁয়াজ আছে তা শ্যামবাজার থেকে ৭৫ টাকা করে কেনা। এখন এই পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।