করোনার প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে না আসায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অনলাইনে লেখাপড়া চলছে। পাশাপাশি টেলিভিশন ও বেতারে বিভিন্ন পর্যায়ের ক্লাস প্রচারিত হচ্ছে। এবার হচ্ছে না জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষাও। আর তাই উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষা নিয়েই এখন চিন্তায় আছে শিক্ষা প্রশাসন।
সম্প্রতি করোনা শনাক্তের হার কিছুটা কমায় এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই এই পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে খবর প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করা সম্ভব না হলে আগামী দিনে অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাও আনুপাতিক হারে পেছাতে হবে। যদি এইচএসসি পরীক্ষা গ্রহণে আরো দেরি হয়, তাহলে উচ্চশিক্ষায় সেশনজট দীর্ঘ হবে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুললেও চলতি বছরের মধ্যেই এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করতে চায় শিক্ষা বোর্ডগুলো।
করোনা পরিস্থিতির আরেকটু উন্নতি হলে আগামী নভেম্বরেই এই পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আন্ত শিক্ষা বোর্ডের সভা ডাকা হয়েছে। করোনাকালে এটিই শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানদের সরাসরি প্রথম সভা। এতে মূল আলোচনার বিষয়বস্তু হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে পরিকল্পনা এবং জেএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন। যেহেতু এবার জেএসসি পরীক্ষা হচ্ছে না তাই কীভাবে এসব শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে উন্নীত হবে, সে ব্যাপারে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
আন্ত শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর আন্ত শিক্ষা বোর্ডের নিয়মিত বৈঠক। তবে অনেক দিন পর সরাসরি সভা হচ্ছে, যেখানে বোর্ড চেয়ারম্যানরা থাকবেন। পরীক্ষাসহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে। আমরা সব বোর্ড চেয়ারম্যানের মতামত ও পরামর্শ জানব।
এইচএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, আমরা এখনো আগের অবস্থানেই আছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অন্তত ১৫ দিন পরে এই পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। তবে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সব ধরনের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।
জানা যায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইচএসসি পরীক্ষা নিতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, সে ব্যাপারে এরই মধ্যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো, যা আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এবার প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হতে পারে। কেন্দ্রের সংখ্যাও কয়েক গুণ বাড়ানো হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের ঢোকানো হবে এবং বের করা হবে। কোনো কেন্দ্রে যাতে ৫০০-এর বেশি শিক্ষার্থীকে বসাতে না হয়, সে ব্যাপারেও পরিকল্পনা করা হয়েছে।
চলতি বছরের ১ এপ্রিল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এ পরীক্ষাসূচি স্থগিত করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আবারও বাড়ছে। আগামী ৩ অক্টোবরের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে না।