নারায়ণগঞ্জের বাবুরাইল এলাকায় বাইতুল ফালাহ জামে মসজিদের পানির ট্যাংকির সংযোগ মেরামত করাকালে বিদ্যুতায়িত হয়ে মনির হোসেন নামে এক স্যানিটারি মিস্ত্রী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিন সোলায়মান।
নিহত মনির হোসেনের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার বউলতলি গ্রামে। তিনি দীর্ঘদিন যাবত স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দুই নম্বর বাবুরাইল এলাকায় আরিফ কনট্রাক্টরের বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মনিরের মৃত্যু শোকের কান্নায় কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন স্ত্রী রোকেয়া বেগম। তিনি জানান, সকাল সাড়ে নয়টায় মসজিদে পানির পাইপ মেরামতের কাজ করতে যাবার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। আধা ঘণ্টা পর তার মৃত্যুর খবর আসে। এই বলেই তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সকাল থেকে মসজিদের ওযুখানায় পানি সরবরাহ না হওয়ায় সেটি মেরামতের জন্য তিন তলা মসজিদটির ছাদে ট্যাংকি পরীক্ষা করতে যান স্যানিটারি মিস্ত্রী মনির হোসেন। সেখানে ত্রুটি দেখতে পেয়ে মেরামতের কাজ শুরু করেন। পাশে ছিলেন মুয়াজ্জিন সোলায়মান।এক পর্যায়ে ট্যাংকির পাশে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তারে জড়িয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে নীচে পড়ে গুরুতর আহত হন মনির। তাকে বাঁচাতে গিয়ে একইভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন মুয়াজ্জিন সোলায়মান।
পরে স্থানীয়রা দুইজনকে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে স্যানিটারি মিস্ত্রী মনিরের মৃত্যু হয়। আহত মুয়াজ্জিনকে নারায়ণগঞ্জ সদরের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহত মুয়াজ্জিন সোলায়মান বলেন, মসজিদের ছাদে মনির মিস্ত্রি পাইপের কাজ করছিলো। আমি তার পাশে দাঁড়িয়ে কাজ দেখছিলাম। এক পর্যায়ে বিদ্যুতের তার তার গায়ে লেগে ছাদ থেকে নীচে পড়ে যান। পড়ে যাবার আগে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তার গায়েও বিদ্যুতের তারের ছোঁয়া লাগে। এতে তার দুই হাত পুড়ে যায়।
বিষয়টিকে দুর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদূর রাশেদ রাশু বলেন, মসজিদে বিদ্যুতের সংযোগে কোন ত্রুটি নেই। পানির লাইনে পানি সরবরাহ না হওয়ার খবর পেয়ে মনির মিস্ত্রি নিজ থেকেই পাইপ মেরামতের কাজ করতে ছাদে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন। তাকে কাজ করার জন্য বলেনি।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মনির হোসেনকে স্থানীয় এলাকাবাসী ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে নিহিতের স্বজনদের অনুরোধে শাহবাগ থানা পুলিশ কর্তৃপক্ষ ময়না তদন্ত ছাড়া লাশ বুঝিয়ে দেবে বলে শুনেছি। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কারো পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ আসেনি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।