ব্যাপক সমালোচনার মুখে অবশেষে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার ব্যবস্থাপনা শিখতে ৫০০ কর্মকর্তাকে বিদেশে পাঠানোর প্রস্তাবটি বাতিল করেছে পরিকল্পনা কমিশন। প্রকল্পটি পুনর্গঠন করা হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান স্বপন কুমার ঘোষ।
তিনি বলেন, শুধু এই প্রকল্প নয়, করোনার সময় সব প্রকল্পেরই বিদেশ সফর বাতিল করা হচ্ছে। সরকারের অর্থ সাশ্রয় এখন জরুরি। স্থানীয় প্রশিক্ষণের জন্য প্রস্তাবিত ব্যয় বরাদ্দের ১৫ কোটি রাখা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন করোনার সময় সবকিছুই সংকুচিত হচ্ছে।
দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের সপ্তাহে তিন দিন খিচুড়ি ও তিন দিন বিস্কুট (মিড ডে মিল) দেবে সরকার। এ জন্য প্রায় ১৯ হাজার ২৮২ কোটি টাকার কর্মসূচি হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। পাঁচ বছর মেয়াদি এ কর্মসূচি আগামী জানুয়ারি থেকে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
এর আওতায় প্রায় এক কোটি ৪৮ লাখ শিক্ষার্থীকে পুষ্টিকর বিস্কুট ও রান্না করা খিচুড়ি দেওয়া হবে। ৫০৯টি উপজেলার শিক্ষার্থীরা এ খাবার পাবে।
এই প্রকল্পের অধীনে দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পাঁচ বছরে মোট ৫০০ জনকে বিদেশে প্রশিক্ষণে পাঠানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।
স্বপন কুমার ঘোষ গণমাধ্যমকে বলেন, কেউ আমাদের কাছে একটি আবদার করলেই হবে না। আমরা একনেকের (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুশাসনের বাইরে যেতে পারব না। বর্তমানে করোনা সংকট চলছে। কোনো প্রকল্পেই বিদেশ ভ্রমণের খাত রাখা হচ্ছে না। তাহলে এ প্রকল্পে সেটা কেন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে প্রশিক্ষণ খাতও বাতিল করা হয়েছে। জনগণের এক টাকাও অপচয় করতে দেওয়া হবে না। তাই ১৫ কোটি টাকার প্রস্তাব বাতিল করতে বলা হয়েছে। তবে দেশে প্রশিক্ষণের জন্য হয়তো ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা রাখা হবে। প্রকল্পের অন্যান্য খাতও চুলচেরা বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
এদিকে খিচুড়ি রান্না শিখতে বিদেশে যাওয়ার জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, এটি নিউজ নয়, প্রোপাগান্ডা। যারা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে? তাই কিছু বরাদ্দ রেখে প্রস্তাব করা হয়েছে। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তাৎক্ষণিক ব্রিফিংয়ে বলেন, হৈ চৈ করার মতো কিছু হয়নি। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে এখানে চলে এসেছেন।