সকাল ৯:৫১ শুক্রবার ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ৩রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম দেশ শিক্ষককে কান ধরেও ওঠবস করালেন শিক্ষার্থী

শিক্ষককে কান ধরেও ওঠবস করালেন শিক্ষার্থী

লিখেছেন sayeed
Spread the love

বরিশালে একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজের সাবেক শিক্ষক মিজানুর রহমান সজলকে মারধরের পর কান ধরিয়ে ওঠবস করানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। কে বা কারা গত ৯ সেপ্টেম্বর এটি ফেসবুকে পোস্ট করে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আয়লা গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, ২০১৮ সালে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দেন। তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি গত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বন্ধ করে দেওয়া হলে মিজানুর রহমানকে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পাঠদানে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক তাকে দিয়ে বলাচ্ছেন- “ছাত্রীকে বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভনে অনৈতিক প্রস্তাব দেব না।” তাকে কান ধরে ওঠবস করানো হচ্ছে। ভিডিওতে কয়েকজনের কণ্ঠস্বর শোনা গেলেও কাউকে দেখা যায়নি।

এ প্রসঙ্গে মিজানুর রহমান সজল বলেন, বরিশালে নার্সিং ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতা করার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিরোধ হয়। এর মধ্যে ইমতিয়াজ ইমন নামে এক শিক্ষার্থী ও তার স্ত্রী মনিরা আক্তার ছিলেন। তারা ক্লাস ফাঁকি দিতেন এবং লেখাপড়ায় অমনোযোগী ছিলেন। তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে বললে তারা তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। উল্টো পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাইয়ে দিতে নানাভাবে চাপ দিয়ে আসছিলেন তারা।

তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্ট দুপুরে আমি নগরের চৌমাথা দিয়ে একটি কাজে যাচ্ছিলাম। সেখানে ইমন ও তার ৬ থেকে ৭ জন বন্ধু আড্ডা দিচ্ছিলেন। তারা আমার পথ রোধ করেন। কথা আছে বলে তারা আমাকে পাশের নির্জন স্থানে যেতে বলেন। আমি যেতে চাইনি। তখন তারা আমাকে জোর করে অক্সফোর্ড মিশন রোড এলাকায় নিয়ে যান। একটি দোকানে বসিয়ে তারা আমাকে নানাভাবে অপমান করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড় মারেন।

তারা সেখান থেকে আমাকে নগরের গোরস্থান রোডের নির্জন স্থানে নিয়ে যান। আবার আমাকে মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ইমন আমাকে কান ধরে ওঠবস করান। আমাকে দিয়ে “ক্লাসে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করি, ভবিষ্যতে আর করব না”—এমন কথা বলিয়ে নেয়। একজন এগুলো মুঠোফোনে ধারণ করেন।

ইমন তখন তার স্ত্রীকে সেখানে ডেকে আনেন। ক্ষমা চাইতে বলেন। অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বিবস্ত্র করতে চান। তখন বাধ্য হয়ে আমি ইমনের স্ত্রীর কাছে ক্ষমা চাই। ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আমার তো বেঁচে থাকার মতো কোনো অবস্থা নেই। যে অবস্থা তাতে আমি মুখ দেখাব কীভাবে?

এ প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ ইমন বলেন, ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে মেয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তার কারণে আমার স্ত্রী এখনো পাস করতে পারেননি। তাকে ধরে নিয়ে এ ধরনের কাজ করবেন না- এমন মুচলেকা নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কান ধরে বলেছেন এমন কাজ আর করবেন না।

প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ না করে কেন নিজেরা ব্যবস্থা নিলেন এমন প্রশ্নে ইমন বলেন, তিনি তো ওখানে চাকরি করেন না। তবে ফেসবুকে কে ভিডিও দিয়েছে, তা তিনি জানিনা।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More