পৃথিবীতে যুগে যুগে এমন মানুষের জন্ম হয়েছে যারা একক প্রচেষ্টায় বদলে দিয়েছেন মানুষের ভাগ্য। সারা জীবন পরিশ্রম করে অন্যদের জন্য বয়ে এনেছেন আশীর্বাদ। ভারতের বিহার রাজ্যের লাউঙ্গি ভুইয়া এমনই একজন মানুষ। ৩০ বছর ধরে সেচের জন্য একাই খনন করেছেন ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল। যার ফল এখন ভোগ করছেন গয়া জেলার লাথুয়া এলাকার কোথিলা গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামে মিটেছে জলের সমস্যা।
বিহারের গয়া জেলা থেকে কোথিলা গ্রাম প্রায় ৮০ কিলো দূরে। শরনার্থী ও মাওবাদীদের গ্রাম বলে পরিচিত এখানকার মানুষের প্রধান পেশা কৃষি ও পশুপালন।
শুকনো মৌসুমে গ্রামে সেচের জন্য থাকে না জল। গ্রামের তিন কিলোমিটার দূর দিয়ে বয়ে গেছে নদী। বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির জল পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নদীতে নামে। লাউঙ্গি ভাবলেন নদী খনন করে যদি গ্রাম পর্যন্ত আনা যায় তাহলে আর পানির কষ্ট থাকবে না।
সেটা ৯০ দশকের কথা। জঙ্গলে গিয়ে মাটি খুড়তে শুরু করলেন লাউঙ্গি। প্রতিদিন কয়েক ঘন্টা করে খাল কাটেন তিনি। অবশেষে ৩০ বছর পর নদীর পানি গ্রামে নিয়ে এসেছেন লাউঙ্গি। এই কাজে কেউ তাকে সাহায্য করেনি। এমনকি অনুপ্রেরণাও দেয়নি। পানির সমস্যার কারণে গ্রামের অনেকে শহরমুখী হলেও লাউঙ্গি থেকে গেছেন নিজ গ্রামেই।
কোথিলা গ্রামে এখন বড় পুকুর রয়েছে। নদী থেকে পানি গড়িয়ে জমা হয় সেখানে। মানুষ সেচ এবং নিত্যদিনের প্রয়োজন মেটায় সেই পানি থেকেই। এক লাউঙ্গির একক প্রচেষ্টায় বদলে গেছে কোথিলা গ্রামের মানুষের ভাগ্য।