দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম এর উপর বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদ ও হামলাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ইতোমধ্যেই হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে।
কি কারণে এই হামালা করা হলো তা তদন্ত করার জন্য পুলিশ ও র্যাবের একাধিক সদস্য কাজ করছে।
জানা গেছে, ওয়াহিদা ছোটবেলা থেকে ছিলেন প্রচণ্ড মেধাবী। জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রত্যাশিত ফলও পেয়েছেন। উপজেলার সর্বামঙ্গলা হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করে পরবর্তীতে এইচএসসির গণ্ডি পেরিয়ে ২০০২-০৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
তথ্যমতে, ৩১তম বিসিএসের মাধ্যমে প্রশাসন ক্যাডারভুক্ত হন ওয়াহিদা। তার স্বামী মেজবাউল হোসেনও একই ব্যাচ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্ম’রত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি রংপুরের পীরগঞ্জে দায়িত্ব পালন করছে। তাদের চার বছরের এক ছেলে রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওয়াহিদা খানমের বাবার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুরে। তবে আদিবাড়ি রাজশাহীর বাঘমারা উপজেলার গণিপুর ইউনিয়নে। বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ মহাদেবপুর উপজে’লা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ অফিসে চাকরি করতেন। সে সুবাদে সেখানেই ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন তারা। ওয়াহিদা ছাড়াও ওম’র আলী শেখের আরো চার সন্তান রয়েছে; এদের মধ্যে তৃতীয় সন্তান ওয়াহিদা।
স্থানীয়রা জানায, কারো ক্ষতি দেখতে পারতেন না ওয়াহিদা। যেখানেই অন্যায় দেখেছেন, সাধ্যমতো সমাধান দেয়ার চেষ্টা করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন। ব্যক্তিজীবনে ওয়াহিদা সবার সঙ্গে হাসিমাখা মুখে কথা বলতেন।
এই ঘটনায় ওয়াহিদা খানমের ব্যাচের বন্ধরাও ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ৩১তম বিসিএস ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব আমিনুর রহমান বলেন, আমরা এ ঘটনায় গভীরভাবে মর্মাহত। ঘটনায় যারাই জড়িত তাদের চিহ্নিত করে শা’স্তি দিতে হবে।
জয়নুল আবেদিন নামে একজন লিখেছেন, ‘দিনাজপুরে এডিসি হিসেবে কাজ করার সময় ছোট্ট বোনটার সঙ্গে অনেক স্মৃ’তি জড়িয়ে আছে। কোন এক সময় ১৩ জন ইউ এন ও এর মধ্যে একমাত্র লেডি অফিসার ছিল প্রিয় ওয়াহিদা। সাতভাই চম্পার মতো ডিসি স্যারসহ আমরা বলতাম ছোট্ট বোনটাকে তোমরা দেখে রাখো। কিন্তু আমরা দুঃখিত, লজ্জিত তাকে দেখে রাখতে পারলাম না। তার বাসায় বেশ কয়েকবার গিয়েছি, অনেক স্মৃতি। মহান আল্লাহ উত্তম হেফাজতকারী। দয়াময় প্রভু প্রিয় বোনটাকে খুব তাড়াতাড়ি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন এই কামনাই করি।