সকাল ১০:০৫ শুক্রবার ১৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ ৩রা জিলহজ, ১৪৪৬ হিজরি

হোম অন্যান্যধর্ম এবার হিন্দু দেবতা রামকে নিজেদের বলে দাবি নেপালের

এবার হিন্দু দেবতা রামকে নিজেদের বলে দাবি নেপালের

লিখেছেন মামুন শেখ
এবার হিন্দু দেবতা রামকে নিজেদের দাবি করলো নেপাল-durantobd.com
Spread the love

এবার হিন্দু দেবতা ‘রাম’কে নিজেদের বলে দাবি করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তার দাবি, রাম ভারতীয় নন, তিনি নেপালি। সোমবার (১৩ জুলাই) কাঠমান্ডুর বালুওয়াতারে সরকারি বাসভবনে এমন দাবি করে তিনি।

রামের জন্মভূমি অযোধ্যা আসলে ভারতের অযধ্যা নয়, এটি নেপালে বলে দাবি করে ওলি বলেন, আসল অযোধ্যা নেপালে। রাম ভারতীয় নন, তিনি নেপালি। কাঠমাণ্ডুর কাছে সেই ছোট্ট গ্রাম অযোধ্যা। সেখানেই জন্ম হয়েছিল রামের।

কেপি শর্মা ওলির প্রশ্ন, রাম যদি ভারতেই থাকতেন, তাহলে কীভাবে অযোধ্যার রাজার পুত্র জনকপুরে বিয়ে করতে আসেন?

তিনি বলেন, ‘জনকপুর (সীতার জন্মস্থান) যদি এখানে থাকে আর অযোধ্যা যদি সেখানে (ভারতে) থাকে, তাহলে তাদের বিয়েটা কীভাবে হলো? সেই আমলে কী কারো পক্ষে এটা করা সম্ভব ছিল? সেই সময়ে টেলিফোন-মোবাইল ছিল না! তাহলে কীভাবে (এই রাজকন্যার ব্যাপারে তিনি) জানলেন? সেটা জানার কোন সম্ভাবনা ছিল না।

নেপালি ওয়েবসাইট সেতোপতি ডটকম ওলির অভিযোগকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, নেপালের সংস্কৃতিকে দমিয়ে রাখা হয়েছে। দেশের সংস্কৃতিতে জোর করে অনুপ্রবেশের ঘটনাও ঘটেছে।

ওলি বলেন, আমাদের সাংস্কৃতিকভাবে নিগৃহীত করা হয়েছে। সত্যটা জবরদখল করা হয়েছে। আমরা এখনো বিশ্বাস করি যে, আমরা সীতাকে ভারতীয় রাজপুত্র রামের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। আসলে আমরা তাকে অযোধ্যার রাজপুত্রের কাছে তুলে দিয়েছিলাম, ভারতের রাজপুত্রের কাছে নয়। অযোধ্যা বীরগঞ্জ থেকে সামান্য পশ্চিমের একটি গ্রাম, এখন যে অযোধ্যা (ভারতে) সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা না।

ভারতের সঙ্গে অনেক দিন থেকেই নেপালের দ্বন্দ্ব চলে আসছে

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টাইমসের খবরে বলা হয়, এর আগে গত মাসে ভারতের সঙ্গে বিতর্কিত কিছু এলাকাকে নিজেদের দাবি করে পার্লামেন্টে বিল পাস করে নেপাল। এ নিয়ে দীর্ঘ দিনের বন্ধু ভারতের সঙ্গে তাদের মনমালিন্য চলছে।

এরমধ্যে চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বিরুদ্ধে অবমাননাকর খবর প্রচারের অভিযোগে দুরদর্শন বাদে ভারতের সব টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে নেপাল।

এর আগে ভারতের উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস, লিম্পিয়াধুরা এবং কালাপানি এলাকাকে নেপাল তাদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে। নেপালের এই দাবির তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানোর পাশাপাশি, তাদের দাবিকে অস্বীকার করেছে ভারত সরকার।

শুধু তাই নয় নেপালে করোনাভাইরাস ছড়ানোর জন্য ভারতকে দায়ি করেন ওলি। তিনি বলেন, চিনা এবং ইতালীয় ভাইরাসের থেকে ভারতের ভাইরাস অনেক বেশি মারাত্মক।

রাম কে?

রাম (সংস্কৃত: राम) হলেন হিন্দু দেবতা বিষ্ণুর সপ্তম অবতার। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলিতে তাকে অযোধ্যার রাজা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছ। রাম হিন্দুধর্মের একজন জনপ্রিয় দেবতা। তিনি বিষ্ণুর অবতার হলেও মূলত শিব-এর আরাধনা করতেন। ভারত এবং নেপাল ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশে রাম-এর পূজা করা হয়। রাম সূর্যবংশে (ইক্ষ্বাকু বংশ বা পরবর্তীকালে উক্ত বংশের রাজা রঘুর নামানুসারে রঘুবংশ নামে পরিচিত) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রামনবমী তিথিতে রামচন্দ্রের জন্ম-উৎসব পালন করা হয়।

রাম-সংক্রান্ত পৌরাণিক কাহিনীর প্রধান উৎস হল ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ। লোকবিশ্বাস অনুসারে, রামের জন্মস্থান ভারতের অযোধ্যা শহর। রাম অযোধ্যার রাজা দশরথ ও তার প্রধান স্ত্রী কৌশল্যার জ্যেষ্ঠপুত্র। হিন্দুরা রামকে বলেন ‘মর্যাদা পুরুষোত্তম’ (অর্থাৎ, ‘শ্রেষ্ঠ পুরুষ’ বা ‘আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিপতি’ বা ‘গুণাধীশ’)। তিনি বিয়ে করেন সীতাকে। সীতাকে হিন্দুরা লক্ষ্মীর অবতার মনে করেন। হিন্দুদের দৃষ্টিতে তিনি নারীর আদর্শ।

রাম-সংক্রান্ত পৌরাণিক উপাখ্যানের প্রধান উৎস ঋষি বাল্মীকি রচিত রামায়ণ মহাকাব্য। ঐতিহাসিক এইচ. ডি. শঙ্কলিয়ার মতে, খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতাব্দীতে রামায়ণ রচিত হয়। এ. এল. ব্যাশামের মতে অবশ্য রাম খ্রিস্টীয় অষ্টম বা সপ্তম শতাব্দীর এক ক্ষুদ্র গোষ্ঠীর নেতা ছিলেন।

You may also like

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More