একটানা টানা ১৯ ঘণ্টা প্রেমিকের বাড়িতে অনশন তারপর হাসপাতালে, তারপরও মেলেনি স্বীকৃতি। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার এক গ্রামে।
জানা গেছে, গত ১লা জুলাই অনশনের পর থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন প্রেমিকা। তবে প্রতারণা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রেমিকসহ এগারো জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন এই তরুণী। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে, মৌলভীবাজার বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের মুর্শিবাদকুরা গ্রামে। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন ও বড়লেখা থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৌলভীবাজার বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের মুর্শিবাদকুরা গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে কালন মিয়ার সঙ্গে পাশের খুটাউড়া গ্রামের তাজ উদ্দিনের মেয়ে নাজমিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল।
জানা যায়, সম্প্রতি নাজমিনের বাবা-মা বাড়িতে ছিলেন না থাকার সুযোগে কালন মিয়া রাতেই তাদের বাড়িতে অবস্থান করে এবং দৈহিক সম্পর্কে জড়ায়। কিছুদিন পর প্রেমিকা (নাজমিন বেগম) তাকে বিয়ের জন্য প্রেমিককে চাপ দেয়। তবে প্রেমিক কালন নাজনীনের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। বিষয়টি নাজমিন তার বাবা মাকে খুলে বললে তিনি গ্রামের মাতব্বরসহ জনপ্রতিনিধির দ্বারস্থ হন। গ্রাম্য সালিস বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় প্রেমিক তাকে স্ত্রী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ঘরে তুলে নিতে। এ সিদ্ধান্ত প্রথম দিকে মেনে নিলেও পরে অস্বীকার করে। উল্টো এখন নাজমিনের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
অবশেষে প্রেমিকা নাজমিন বেগম ১ জুলাই বুধবার বিকাল তিনটায় প্রেমিক কালন মিয়ার বাড়ির বারান্দায় গিয়ে অবস্থান নেয়। প্রেমিকার দাবি তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তুলে নিতে। এ দাবিতে সে টানা দীর্ঘ উনিশ ঘণ্টা অনশন শুরু করে। অভিযোগ আছে, বারান্দায় বসে অনশন করা অবস্থায় তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। এতেও সে তার দাবি থেকে সরে দাঁড়ায়নি। এক পর্যায়ে প্রেমিকা আত্মহত্যার হুমকি দেয়। এতে বিচলিত হয়ে প্রেমিকের পরিবার রাতভর গ্রাম পুলিশ দিয়ে পাহারা দেয়।
তবে অনশনের পরের দিন বৃহস্পতিবার (০২ জুলাই) দুপুরে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আজ (শনিবার) চারদিন ধরে চিকিৎসাধীন আছে। এদিকে পুলিশ আজ প্রেমিক কালন মিয়ার বড় ভাই মো. হারুন মিয়াকে আটক করে বড়লেখা থানায় নিয়ে আসা হয়।
বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসিনুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলছেন। তিনি জানান বিষয়টি সমাধানে স্থানীয় পর্যায়ে চেষ্টা চলছে।